গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৫০

গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত আরও ৫০

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি বিমান হামলায় আরও অন্তত ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গাজার খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি তাঁবু ক্যাম্পে হামলায় ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও বহু ফিলিস্তিনি।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আলজাজিরা একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনি চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি তাঁবু ক্যাম্পে বুধবারের হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছে। হামলায় বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর কয়েকটি তাঁবুতে আগুন লেগে যায়।

আলজাজিরার প্রতিনিধি হানি মাহমুদ মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে জানান, এই বর্বর হামলার ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তিনি বলেন, হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং অপর্যাপ্ত চিকিৎসক সংকটের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, এই ধরনের ঘটনা নতুন নয়। গাজার আল-মাওয়াসি অঞ্চলে বসবাসরত বাস্তুচ্যুত জনগণের মধ্যে হতাশা ক্রমবর্ধমান। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী পূর্বে তাদের বাড়িঘর থেকে সরে যেতে বলেছিল, যাতে তারা বোমা হামলা থেকে বাঁচতে পারে।

অন্যদিকে, গাজা শহরের তিনটি বাড়িতে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া লোকদের উদ্ধারের অভিযান চলছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মধ্য গাজায় তিনটি বিমান হামলায় ৬ শিশু ও ১ চিকিৎসকসহ ১১ জন নিহত হয়েছেন।

এদিকে, গত অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪,৫৩২-এ পৌঁছেছে, এবং আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ৫৩৮ জন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারের বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইলের আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। ইসরাইলের এই হামলায় গাজার হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে, এবং প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গাজায় খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকট চলছে, এবং এখন সবাই খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এর পাশাপাশি, গাজার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।